মঙ্গলবার, ২০ মার্চ ২০১৮ |
৮:০০ অপরাহ্ণ |
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষক তহিদুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে ইবিতে অধ্যয়নরত ঠাকুরগাঁও জেলার শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম ওয়াজেদ আলী ভবনের পরিসংখ্যান বিভাগে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে বরণ করে নেওয়া হয়।
ঠাকুরগাঁও জেলার কীর্তি সন্তান তহিদুর রহমান গত ১৭ ফেব্রুয়ারী ইবির পরিসংখ্যান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। প্রভাষক তহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার শালডাঙ্গা গ্রামে ১৯৮৪ সালের ২০ আগস্ট এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নিজামউদ্দিন পেশায় কৃষক এবং মা জরিনা বেগম গৃহিণী। কৃষক পরিবারের সন্তান হলেও প্রভাষক রহমান ছোটবেলা থেকেই অসাধারণ প্রতিভা ও অসামান্য মেধা ও কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন। তার পড়াশোনার হাতে খড়ি হয় শালডাঙ্গা গ্রামে । তিনি ১৯৯৯ সালে লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০১ সালে সমিরউদ্দিন স্মৃতি মহাবিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি পাশ করেন। ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন এবং কৃতিত্বের সাথে অনার্স,মাস্টার্স ও এমফিল ডিগ্রী লাভ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয়মুখ প্রভাষক বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। গবেষণার ক্ষেত্রেও তিনি পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত ‘বায়মেট্রিক্স ও বায়োস্ট্যাটিস্টিক্স’ নামে প্রথম সাড়ির আন্তর্জাতিক গবেষণাধর্মী জার্নালে “মার্কেটিং পলিসি দ্যাট অ্যাক্সিলার্যাট টোব্যাকো ইউজ ইন বাংলাদেশঃ অ্যা স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইভেস্টিগেশন” শিরোনামে তার একটি প্রকাশনা বের হয়।
প্রভাষক রহমান মানুষ হিসেবে অত্যান্ত সৎ ও শান্ত-শিষ্ঠ স্বভাবের। তিনি সাফি কনসালটেন্সি কোম্পানিতে কয়েক বছর সিনিয়র স্ট্যাটিস্টিক্যাল প্রোগ্রামার হিসেবে উচ্চবেতনে কাজ করেন। কিন্ত উচ্চবেতনের টাকা তার মনজয় করতে পারেনি কারণ ছোট বেলা থেকেই যার ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হওয়ার।
প্রভাষক রহমানের ভাষ্যমতে, ছোট থাকতে হতে চেয়েছিলেন স্কুলের বিএসসি শিক্ষক। কিন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পরই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয় । বদলে যেতে থাকে স্বপ্নের রঙ । বৃহত্তর অবদান রাখতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতেই হবে এই প্রত্যয় নিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন, লক্ষ্যে্টা ছিল অনেক বড় হওয়ার তাই কোন কিছুতেই হার না মেনে লড়াই চালিয়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত, হাজারো প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও থেমে যাননি কখনোই। জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে তার সেই স্বপন স্বপ্ন আজ বাস্তব রূপ নিয়েছে। তাই তিনি অত্যান্ত আনন্দিতও বটে। আজীবন কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাবা-মা এবং স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি।
ঠাকুরগাঁও এর মুখ উজ্জ্বলকারী গর্বিত এই শিক্ষক প্রভাষক তহিদুর রহমানকে স্বাদরে বরণ করতে ভুলে যাননি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ঠাকুরগাঁও জেলার শিক্ষার্থীরা । তাইতো তারা তাদের প্রিয় জেলার অভিভাবক কে আজ এক মহেন্দ্রক্ষণে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এম সাইফুল্লাহ আলম, আমিমুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সালেহ শামীম, উম্মে হাবিবা, গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আরফাত সরকার জীবন, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন ও বাদল সহ আরো অনেকে।
নিজ জেলার অনুজদের কাছে পেয়ে ও তাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে প্রভাষক তহিদুর রহমানও অনেক আনন্দিত।
comments