জামালপুর সদর উপজেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নে লাবিব নামের ছয় বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর প্যাকেটের জুসে নেশাজাতীয় ওষুধ মিশিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
অপরহণকারীরা গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অপহরণের পর শিশুটিকে অচেতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ফাঁদ পেতেছিল। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাঁশচড়া ইউনিয়নের ঝাউলা গোপালপুরের বন্দেবাড়ি গ্রামের ওমান প্রবাসী ইউছুফ আলীর ছয় বছরের শিশু সন্তান লাবিব গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিখোঁজ হয়। শিশুটির সন্ধানে আশপাাশের এলাকায় অনেক খোঁজাখুঁজি এবং এলাকার মসজিদ থেকে মাইকেও প্রচার করা হয়।
সন্ধ্যায় একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি শিশুটির মা লাবনী খাতুনকে ফোন করে জানায়, তার ছেলে লাবিব ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে রয়েছে। তাকে নিতে হলে সেখানে যেতে হবে। বিষয়টি নিয়ে লাবনী খাতুন পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা করে রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার নরুন্দি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ওই ফোন নম্বর ও ফোনের কথাগুলো উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আনছার উদ্দিন অনুসন্ধান চালিয়ে রাত দেড়টার দিকে নিশ্চিত হন যে শিশু লাবিবকে তাদের বাড়ির কাছেই একটি ধান ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ স্থানীয় ফয়সাল খন্দকার নামের এক যুবকের বাড়ির পাশের ধান ক্ষেত থেকে শিশু লাবিবকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ শুক্রবার ভোরে পুলিশ গ্রামবাসীর সহায়তায় একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে ফয়সাল খন্দকার (২৪) এবং পূর্ব বাঁশচড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে সানোয়ার হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। পরে ওই দুজনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী স্থানীয় ঝাওলা গ্রামের খবির হোসেনের ছেলে বাবুল হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে।
শিশু লাবিবের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শিশু অপহরণ ও হত্যার ঘটনা জানতে পেরে জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন আজ শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শিশুটির শোকার্ত মা লাবনী খাতুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা এইভাবে মারল, তাদের প্রত্যেকের আমি ফাঁসি চাই।’
নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আনছার উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ফয়সাল খন্দকার ও তার সহযোগীরা শিশু লাবিবকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ফাঁদ পেতেছিল। কোথা থেকে কে ফোন করেছিল তাও নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা শিশুটিকে অপহরণ করে প্যাকেটের জুসে নেশা জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে লুকিয়ে রেখেছিল। সাধারণ ডায়েরি করার পর হয়তো তারা সুবিধা করতে না পেরে ধান ক্ষেতে ফেলে দিয়েছিল। এই অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে আরো কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, এ ঘটনায় নিহত শিশু লাবিবের মা লাবনী খাতুন বাদী হয়ে অপহরণ করে হত্যার অভিযোগে আজ শুক্রবার জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার ফয়সাল খন্দকার, সানোয়ার হোসেন ও বাবুল হোসেনসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com