ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ভেঙ্গে যাওয়া সেনুয়া বেইলি ব্রীজটির দির্ঘ পাঁচ মাসেও সংস্কার বা নতুন করে নির্মানের কোন ব্যাবস্থা না করায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে অস্থায়ী কাঠের সেতু দিয়ে। আগামী বর্ষার আগে সেতুটি সংস্কার বা বিকল্প কোন ব্যাবস্থা না করা হলে চরম ভোগান্তির স্বীকার হবেন সাধারন জনগণ। এদিকে সমস্যা সমাধানে খুব শিঘ্রই স্থায়ী নতুন ব্রীজ নির্মান করার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানিয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সেনুয়া ব্রীজটি গত ৮ ডিসেম্বর অতিরিক্ত মালবোঝাই ট্রাকসহ ভেঙ্গে পড়ে। এতে শহরের সাথে ব্রীজের ওপাড়ের পাঁচ ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়ে নিয়মিত ব্রীজ ব্যাবহারকারি প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ঘটনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে অস্থায়ীভাবে একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করা হলেও তাতে তেমন একটা সুবিধা হয়নি সাধারন মানুষের। কারণ এই সাঁকো দিয়ে পথচারি ও হালকা যান চলাচল করলেও ভাড়িযান চলাচল সম্ভব নয়। আর তাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন নদীর ওপাড়ের কৃষক, ব্যাসবায়ীসহ অন্যান্যরা। বিশেষ করে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছেনা কৃষকরা।
সদর উপজেলা বরুনাগাঁও এলাকার আবুল হোসেন সরকার মহাবিদ্যালয়ের সহকারি প্রভাষক ইয়াসমীন আরা পারভীন বলেন, ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার প্রায় পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হলেও এটিকে সংস্কার বা নতুন করে নির্মানের কোন দৃশ্যমান উদ্বোগ এখনো চোখে পড়ছেনা। খুব কষ্ট করে তাকে কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে। আগামী জুনের পর বর্ষা মৌসুমে নদী পানিতে পরিপূর্ণ থাকবে প্রায় দুই মাস। এসময় ব্রীজের এপাড়ে বসবাসকারি যারা বিভিন্ন কাজে শহরে নিয়মিত যাতায়াত করেন বিশেষ করে শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ি সহ সাধারন মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। তাই দ্রুত ব্রীজটি নির্মোণের প্রয়োজন।
রাজাগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা আলী হোসেন বলেন, তিন একজন কৃষক, এই ব্রীজের উপর দিয়ে বছরের প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন কাজে যাতায়ত করতে হয়। কিন্তু গত কয়েক মাস যাবত বিকল্প রাস্তা ব্যাবহার করতে হচ্ছে। যেখানে রাজাগাঁও ইউনিয়নের হাট থেকে ব্রীজের ওপার শহরের দূরত্ব প্রায় এগারো কিলো মিটার। কিন্তু বিকল্প রাস্তায় ঘুরে যেতে হয় প্রায় পচিশ কিলো মিটার। এতে করে সময়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থও খরচ হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে মূল ব্রীজের পরিবর্তে যে বিকল্প সাাঁকো তৈরী করা হয়েছে তা দিয়ে রিক্সা ভেন ছাড়া অন্য কোন ভাড়ি যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হচ্ছেনা।
সালন্দর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুব আলম মুকুল জানান, ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার পরপর যাতায়াত ব্যাবস্থা সচল রাখতে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগীতায় ব্রীজের নিচ দিয়ে নদী পারাপার করার জন্য মাটি ভরাট করে রাস্তা তৈরি করে দেয়া হয়েছে। নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। তারা নতুন ব্রীজ নির্মানের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে নতুন ব্রীজ নির্মানের জন্য স্থানীয় এমপি ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। চলতি মাসেই নতুন ব্রীজের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এরপর ঠিকাদার নির্বাচন শেষে শিঘ্রই ব্রীজের কাজ শুরু করা হবে এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রীজের নির্মান কাজ শেষ হবে বলে জানান ঠাকুরগাঁও এলজিইডি নির্বাহি প্রকৌশলী কান্তেশ্বর বর্মণ।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো: আখতারুজ্জামান জানান, হালকা যান ও জনসাধারণের চলাচলের জন্য সাময়িক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তিনকোটি অধিক অর্থব্যায়ে নতুন ব্রীজ নিমার্নের বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। খুব দ্রুত ব্রীজের নির্মাণ কাজ শুরু হবে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে ব্রীজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে যোগাযোগ সমস্যা সমাধান হবে।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com