রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে গত বছরের ৭ নভেম্বর। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আগের ভবনেই শুরু করা হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। এর পর সেখানে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিময়ের অভিযোগ উঠেছে।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ১১ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে অস্থায়ীভিত্তিতে। এদের মধ্যে কয়েকজন বিএনপি-জামায়াতপন্থী পরিবারের। যাদের কেউ কেউ বিএনপি সরকারের আমলে চাকরি পেয়েই পরে চাকরি হারায়; তাদের অনেকেই এখন আবার এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছেন। স্বজনপ্রীতি এবং অর্থের লেনদেনের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠলে সমালচনার মুখে পড়েছেন রামেবি’র উপাচার্য।
রাজশাহী মেডিকেলের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারি জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে ইউজিসি থেকে সার্কুলারের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে মোট ৫১ জনকে নিয়োগ দিতে বলা হয়। কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে ১১ জনকে অস্থায়ীভাবে নেয়া হয়েছে। আরো কয়েকজনকে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পরে তাদের স্থায়ী করা হবে। নতুন নিয়োগে বিপুল অঙ্কের অর্থের বাণিজ্যও হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সেকশন অফিসার জামাল উদ্দিন। তিনি বিএনপি আমলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাইকারি হারে যে ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে অফিস সহকারী পদে চাকরি পেয়েছিলেন। রাজশাহী চারুকলা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করতেন তিনি। তাঁর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। একই পদে নিয়োগ পায়া আরেকজন হলেন আমিনুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি নওগাঁ জেলায়। নিয়োগ পাওয়া আরেক কর্মকর্তা নাজমুল হক। তিনি জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে হিসাবরক্ষক পদে চাকরি করতেন। তাঁকেও সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ফাইন্যান্সের অ্যাসিসট্যান্ট ডাইরেক্টর করা হয়েছে। একই পদে রাজশাহী নগরীর বিনোদপুর এলাকার রাশেদুল ইসলাম, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের উচ্চমান সহকারী সোবহান আলী নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম ইউজিসির সচিবের ব্যক্তিগত অফিসার ছিলেন। কুড়িগ্রাম জেলার উম্মে হাবিবা নামের এক কলেজ ছাত্রীকেও একই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্যের ব্যক্তিগত অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ইসমাইল হোসেন। তিনি রাজশাহীর লক্ষ্মীপুরে অবস্থিত মাইক্রোপ্যাথ ক্লিনিকে রোগিদের তালিকা তৈরি করতেন। এছাড়াও অফিস সহকারী পদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার নূরে রায়হান, এমএলএসএস পদে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার জামায়াতপন্থী জহিরুল ইসলাম এবং ভিসির গাড়িচালক হিসেবে বগুড়ার মাহাবুব রহমানকে ও এমএলএসএস পদে মাহবুবের ভায়রা ভাইয়ের ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নাচোলের দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাবেক সচিব একরামুল হক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে পদগুলো পূরণ করার জন্য ইউজিসি থেকে বলা হয়েছে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে চাপ সামলাতে গোপনে অস্থায়ী ভিত্তিতে একের পর এক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন উপাচার্য। পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এসব লোককেই ফের একই পদে বসানো হবে। তখন অনেক পদেই শুধু লোক দেখানো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চাকরিপ্রার্থীদের হয়রানি করা হবে।’
এ বিষয়ে উপাচার্য মাসুম হাবিব বলেন, ‘গোপনে নিয়োগের বিষয়টি সঠিক নয়। প্রয়োজনের কারণেই কয়েকজনকে অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে কোনো বাণিজ্য হয়নি। ’
উপাচার্য বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদে’ অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ নিয়োগ অনুমোদন দেয়নি। নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও বাণিজ্যের বিষয়টিও সত্য নয়।’
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com