নির্জন মাঠে ভরদুপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন অজ্ঞাত এক নারী যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন। এ ঘটনার আনুমানিক দুই ঘন্টা পর পাশ দিয়ে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় এক কৃষক। হঠাৎ শিশুর কান্না শুনে চারপাশে খোঁজা শুরু করেন কোথা থেকে আসছে কান্না। ক্ষণিকের মধ্যেই পেয়ে যান কান্নার উৎস। কাছে গিয়ে দেখলেন দুটি শিশুর মধ্যে একজনের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে মায়ের পাশে। আরেকজন চিৎকার করে কান্না করছে। শিশু দুটির পাশে রক্তাক্ত শরীর নিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রয়েছে তাদের মা।
তাৎক্ষণিকভাবে লোকটি কি করবে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ফোন করেন স্থানীয় সাংবাদিকদের। স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান ঘটনাস্থলে। সেখানকার স্থঅনীয়রা মা ও শিশুদের উদ্ধার করে ভর্তি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার চিকিৎসক দুই শিশুর মধ্যে একজনকে মৃত ঘোষণা করে অপরজনেরও অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান।
ডবষয়টি স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আঃ মান্নানকে জানান। ঘটনা শুনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছুটে যান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সব ঘটনা দেখে তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করেন।
জেলা প্রশাসক জীবিত শিশুটিকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে উঠেন এবং ইউএনওকে দ্রুত শিশুটি ও তার মাকে সদর হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জেলা শহর থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার এবং শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক ভেবে সিভিল সার্জনকে নিজের গাড়িতে তুলে নেন এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রাওয়ানা দেন জেলা প্রশাসক।
তিনি শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে যাওয়া মাত্রই দেখা পেয়ে যান রোগীবাহী গাড়িটি। তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি থেকে নেমে সিভিল সার্জনকে নিয়ে ছুটে যান শিশুটির কাছে। গিয়ে দেখেন শিশুটির মা অচেতন ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে শিশুটি। দ্রুত সেখানেই অক্সিজেন লাগিয়ে নিয়ে আসেন সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে এসে সিভিল সার্জন জানালেন অক্সিজেন লাগাতে আর ৫ মিনিট দেরি হলে শিশুটি মারা যেত। বর্তমানে সদর হাসপাতালে শিশুটি ও তার মা সুস্থ রয়েছেন। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি এখনও।
এতক্ষণ যে ঘটনাটি বর্ণনা করা হলে সেটি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার জাওনিয়া গ্রামের। আর এই ঘটনায় শিশুটির প্রাণ রক্ষাকারী নায়করা হলেন স্থানীয় কৃষক সাদেকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মান্নান, জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ শাহজাহান নেওয়াজ।
ঠাকুরগাঁও জেলার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা: শাহাজাহান নেওয়াজ বলেন, দ্রুত জেলা প্রশাসক স্যার নবজাতক ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি না করলে বাচ্চাটিকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়তো। প্রসূতি মায়ের অবস্থা অনেকাংশে ভাল ও নবজাতকটি নিরব পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্জন এলাকায় এক প্রসূতি মায়ের দুটি সন্তান প্রসব হয়। এ সময় একটি সন্তান মারা যায়। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের মাধ্যমে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে প্রসুতি মা ও সন্তানের অবস্থার অবনতি হলে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি নবজাতক ও মাকে বাঁচাতে পারবো। প্রসূতি মা ও শিশুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এখনো প্রসূতি মায়ের পরচিয় পাওয়া যায়নি।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com