রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স মাইক্রোবাস সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে রোগী ও তাদের স্বজনরা। যখন আপনজনের লাশ বা মুমূর্ষু রোগী নিয়ে স্বজনরা শোকাহত, কথা বলার মত ভাষা থাকে না তখন ইচ্ছেমতো ভাড়া চাপিয়ে দেয় মাইক্রোবাস ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটগুলো সংগঠিত হওয়ায় তাদের কেউ কিছু বলার সাহস পায় না এবং বাইরের কোন গাড়িও সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এ ব্যাপারে আরএমপি পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি অভিযোগও করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামেক হাসপাতালে বেসরকারি লাশবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী বহনকারী মাইক্রোবাস ব্যবসায়ীরা ভাড়া নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের বাইরে কোন মাইক্রোবাস বা সিএনজি গাড়ি হাসপাতাল চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। জরুরি ভিত্তিতে বহিরাগত কোন গাড়ি হাসপাতালে প্রবেশ করলে গাড়ির চালককে মারপিট করে বের করে দেয়া হয়, এমন একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার এক ভুক্তভোগী মামুনুর রশীদ। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, হাসপাতালের মূল ফটকের ভিতরে জরুরি বিভাগের সামনে সিরিয়াল অনুযায়ী মাইক্রোবাস রাখা থাকে। এছাড়াও লক্ষ্মীপুর মোড় হতে রামেক হাসপাতালের মূল ফটক পর্যন্ত এসকল গাড়ি অর্ধেক রাস্তা দখল করে রেখেছে। যার বেশিরভাগই ত্রুটিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন। কোন মৃতদেহ বা অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতাল থেকে স্বজনরা বের হওয়া মাত্র তাদেরকে ঘিরে ধরে সিন্ডিকেট সদস্যরা এবং ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করে। এ ব্যাপারে হাসপাতাল বক্স পুলিশের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জাকির হোসেন বলেন, লাশবাহি গাড়ি চালকেরা সিন্ডিকেট করে ডাবল ভাড়া দিতে বাধ্য করে। সম্প্রতি তার একজন স্বজন রামেক হাসপাতালে মারা যান। কিন্তু লাশ নিয়ে তারা পড়েন বিপাকে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকা লাশ বহনকারী গাড়ি ভাড়া করতে গেলে রাজশাহী হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে ৬ হাজার টাকা ভাড়া চায় তারা। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সঙ্গে সিন্ডিকেটের যোগসাজশ থাকায় তারাও যেতে রাজি হননি। সেখানে সিন্ডিকেটের বাইরে অন্য কোন গাড়ি না থাকায় বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়াতে যেতে হয় তাদের। কিন্তু সিরিয়ালে যে গাড়ি ছিল সেগুলো ছিল ত্রুটিপূর্ণ। ভালো গাড়ি চাইলে তারা জানায় সিরিয়ালে যে গাড়ি আছে সেটি নিয়েই তাকে যেতে হবে এবং ৬ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। অবশেষে তিনি একটি রিকশাভ্যান ভাড়া করে অন্যত্র গিয়ে অপর একটি গাড়ি ভাড়া করে লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেন। এভাবে আর কতদিন? এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এদিকে গত ১৩ মে লক্ষ্মীপুর এলাকার একজন বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ী আরএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে জানানো হয়, রামেক হাসপাতালে রোগী পরিবহনের উদ্দেশ্যে ৩৫ লাখ টাকা দিয়ে তিনি দুইটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স কিনেন। কিন্তু রামেক হাসপাতালের মাইক্রোবাস সিন্ডিকেট এবং কিছু দালাল সেখানে অন্য কোন গাড়ি প্রবেশ করতে দেয় না। গাড়ি নিয়ে কেউ প্রবেশ করলে গাড়ি ভাঙচুরের হুমকি ও চালককে মারপিট করে বের করে দেয়া হয়। এতে করে তিনি আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এছাড়া রামেক হাসপাতালে সিন্ডিকেট করে রোগীর অভিভাবকের কাছে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করে থাকে ওই সকল দালালরা।
এ বিষয়ে আরএমপি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com