রাবি প্রতিনিধি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ মঙ্গলবার। রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার বুধবার দুপুরে রায় ঘোষণার এই দিন ঠিক করেছেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পরিবার ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশা, আদালত সুষ্ঠু বিচার পাবে। আদালতের উপরে তাদের বিশ্বাস আছে। তাদের প্রশাসন কোন হয়রানি করবে না।
২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহী নগরীর শালবাগান এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয় অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে।
আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত সোমবার থেকে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। বুধবার যুক্তিতর্ক শেষ হলে আদালত রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৮ মে দিন ধার্য করেন।
তিনি জানান, এ মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী ছিলেন। তবে আদালত ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল।
এদিকে, এ রায়কে বেগবান করতে শোক মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে বিভাগের সভাপতি ড. এএফএম মাসউদ আখতার বলেন, ‘রেজাউল করিম হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির রায় প্রদান করবেন আদালত। আশা করছি, প্রশাসন আমাদের কোন প্রকার হয়রানি করবে না। আমরা এই হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অধ্যাপক রেজাউল হত্যাকা-ের দুই বছর অতিবাহিত হলেও আমরা সুষ্ঠু বিচার পাই নি। সুষ্ঠু বিচারের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামী ৮ মে এ হত্যাকা-ের রায় প্রদান করবে। আমরা আশা করি, আদালত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির রায় প্রদান করবেন।’
অধ্যাপক রেজাউল করিমের মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি বলেন, ‘আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। রায় প্রদান না করা পর্যন্ত এর বেশি মন্তব্য করতে পারছি না। আশা করি, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির রায় দিবেন আদালত। রায় দিলেই বোঝা যাবে কতটুকু সুষ্ঠু বিচার হয়েছে।’
এদিকে, ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর ৮ জনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার অভিযুক্ত ৮ আসামির মধ্যে খায়রুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান ও তারেক হাসান ওরফে নিলু ওরফে ওসমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- বগুড়ার শিবগঞ্জের মাসকাওয়াত হাসান ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে সাকিব, নীলফামারির মিয়াপাড়ার রহমত উল্লাহ, রাজশাহী মহানগরীর নারিকেলবাড়িয়া এলাকার আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী, রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শরিফুল এখনও পলাতক। আবদুস সাত্তার রয়েছেন জামিনে। আর বাকি আসামিরা রয়েছেন কারাগারে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জীবিত এবং মৃত আসামিদের সম্পৃক্ততা তিনি প্রমাণ করতে পেরেছেন। রায়ে জীবিত আসামিদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে বলে আশা করছেন তিনি।
তবে এ মামলার আসামি জেএমবির শরিফুল এখনও গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত শিক্ষক রেজাউল করিমের মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি। তিনি বলেন, ‘শরিফুল বাবাকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। সে এখনও গ্রেপ্তার হলো না। এই বিষয়টা আমাদের খুব পীড়া দেয়। আমরা তো তার বিচারই আগে দেখতে চাই।’
শরিফুল অধ্যাপক রেজাউলের ছাত্র ছিল। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় তার বাড়ি। অধ্যাপক রেজাউলের গ্রামের বাড়িও বাগমারায়। তাই তাদের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল। এই হত্যাকা-ের পর থেকেই শরিফুল পলাতক।
অধ্যাপক রেজাউল হত্যার পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আটক এক আইএস জঙ্গির সঙ্গে শরিফুলের সম্পৃক্ততা পেয়েছে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। তাই শরিফুল ভারতেই পালিয়ে আছে বলে ধারণা করে রাজশাহীর পুলিশ। শরিফুলকে ধরিয়ে দিতে রাজশাহী মহানগর পুলিশ দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তার হদিস পাওয়া যায়নি।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com