রাজশাহী প্রতিনিধি: বাসাবাড়িতে গ্যাস-সংযোগ, পরিচ্ছন্ন শহর এবং নারীদের নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য যে প্রার্থী কাজ করবেন বলে মনে হবে আগামী সিটি নির্বাচনে সেইরকম প্রার্থীই নির্বাচিত করবেন নারীরা। পাশাপাশি আগামী সিটি নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অনুষ্ঠিত হয় সেই প্রত্যাশাও তাদের।
নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দল-মত নির্বিশেষ নগরীর উন্নয়নকেই প্রাধান্য দিবেন তারা। বিশেষ করে বাসাবাড়িতে গ্যাস-সংযোগ প্রদান, পরিচ্ছন্ন নগরী ও নারীদের জন্য নিরাপদ শহর তৈরি করতে যারা কাজ করবেন সেই ধরনের প্রার্থীকেই মেয়র পদের জন্য মনোনীত করবেন তারা।
নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা আফরোজা আক্তার পলি জানান, ২০১২ সালের দিকে শহরের অনেক বাড়িতে গ্যাস-সংযোগ গেছে। আমরা পাইনি। তারপর থেকে দীর্ঘ ৬ বছর গ্যাস ছাড়াই চলছি আমরা। ফলে এইবার যাকে ভোট দিলে বাড়িতে গ্যাস সংযোগ পাব তাকেই ভোট দিব। একই কথা জানালেন নগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা কানিজ ফাতিমা। তিনি জানালেন, ভাই, বাড়ির পাশের লোকজন গ্যাসে রান্না করেন। অথচ আমাদের গ্যাসের সিলিন্ডার কিনে এনে রান্না করতে হয়। এই দুঃখ আর কোথায় রাখবো। আগামী ভোট দিতে যাব কিনা এখনো মনস্থির করি নাই। তবে যে গ্যাস-সংযোগ এনে দিবে তাকেই ভোট দিব বলে জানান তিনি।
এছাড়া আগামী নির্বাচনে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, শিক্ষাঙ্গনকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত রাখার ব্যাপারে যিনি কাজ করবেন তাকেই ভোট দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন নগরীর নারী ভোটাররা। সাধুর মোড় এলাকার বাসিন্দা ফজিলাতুন্নেসা বলেন, মেয়রদের কাছে তেমন কিছুই চাওয়া নেই। তবে যারা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা রাখবেন তাকেই ভোট দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। নারীরা যেন নির্বিঘেœ শহরে পথ চলাচল করতে পারে, কোনো ধরনের হ্যারেসমেন্টের শিকার না হয়Ñ এই বিষয়ে যারা কাজ করবেন তাদের ভোট দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মেয়েদের নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানান নগরীর ভেড়িপাড়া মোড়ের বাসিন্দা বিলকিস বানু। তিনি জানান, আমার তিন মেয়ে। তিনজনই কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে। তাই তাদের দিনের বেশিরভাগ সময়ই বাইরে থাকতে হয়। মেয়েরা বাইরে গেলে আমি নিজেই ভয়ে থাকি। কখন নিরাপদে ফিরে আসবে সেই প্রতীক্ষায় থাকি। তাই মেয়র প্রার্থী হিসেবে তাকেই ভোট দেয়া হবে যিনি নারীদের জন্য কাজ করবেন।
নগরীর ভাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুবাইয়া ইদরিস জানান, ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই নগরীর উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েই ভোট দেয়া উচিত। কারণ ভোট দিতে কেন্দ্রে সেকারণেই যাব যাতে করে নগরীর বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটে। রাস্তা-ঘাটের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিনোদন পার্কগুলোতে নিরাপত্তা, যানজট থাকবে না, ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হবেÑ যিনি এমন কাজ করবেন সেরকম প্রার্থীকেই ভোট দিব।
পাশাপাশি নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেই প্রত্যাশাও তাদের। সপুরার বাসিন্দা আনোয়ারা ইব্রাহিম বলেন, গতবার ভোটের সময় নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক মিথ্যা প্রচারণা চলেছে। জামায়াত শিবিরের ও হেফাজতের নারী কর্মীদের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে মেয়র প্রার্থী সম্পর্কে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে। এইবারও যেন এইরকম পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত। একটি গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িত রাষ্ট্রে কেন ধর্ম নিয়ে অপপ্রচার চালানো হবে। উন্নয়নের কথা বিবেচনা করেই তো প্রত্যেকের ভোট দেওয়া উচিত। আর আমি ঠিক সেই কাজটাই করবো। যাতে উন্নয়নের পথ সুগম হয়। তবে ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নারী ভোটার ছিলেন ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২২ জন। আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নারী ভোটারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৩ জন। নারী ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ হাজার। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে এই নারী ভোটাররা একটি প্রধান ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই নারী ভোটারদের উপরই নির্ভর করবে আগামী নির্বাচনে কে হচ্ছেন মেয়র প্রার্থী।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com