আলমডাঙ্গা উপজেলার বলেশ্বরপুর গ্রামে অদৃশ্য সাপের উত্পাত দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে সাপে দংশন করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে সাপের দংশনে কারো মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রামের মুক্তা, রুনা, বিজরি, মিম, জিনজিরা, চন্দন, আতিয়ার, মামুন, বায়োজিত, সাজিদসহ কমপক্ষে ২৫ জন অদৃশ্য সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারা জানায়, রাতের অন্ধকারে তাদের সাপে কামড়েছে। কেউ কেউ বলে মাঠে কাজ করার সময় তাদের সাপে কামড়েছে। যারা সাপের কামড়ে অসুস্থ হয়েছে বলে দাবি করছে, তাদের শরীরে দংশনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তাদের যুক্তি, গ্রামে জিনসাপ এসেছে। এ কারণে পায়ে কোনো দাগ থাকছে না। তবে পা ঝিনঝিন করছে।
আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শিমুল হোসেন মল্লিক জানান, এক সপ্তাহ আগে থেকে গ্রামে এ অবস্থা শুরু হয়েছে। হঠাৎ কারো সন্দেহ হচ্ছে তাকে সাপে কামড়েছে। তারপর সে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পা-হাত ঝিনঝিন করছে, শরীর দুর্বল হয়ে আসছে। গ্রামের দুই-তিনজন কবিরাজ তাদের চিকিৎসা করছেন। ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি থেকে চাল-ডাল তুলে রান্না করে বিতরণ করা হয়েছে।
যারা অদৃশ্য সাপের দংশনে আক্রান্ত হয়েছে তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এবং তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে শিমুল হোসেন মল্লিক বলেন, ‘দুই দিন আগে আমিও আক্রান্ত হয়েছিলাম। অদৃশ্য সাপে কাটা এক অসুস্থ রোগী দেখে ফেরার পথে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার মনে হয়, অদৃশ্য সাপে কেটেছে। হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে, ঝিনঝিন করে।’ তিনি ভেতরে ভেতরে নিজেকে শক্ত করেন। পরে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়। তিনি বলেন, আক্রান্ত বেশির ভাগই ওঝার ঝাড়ফুঁকে ভালো হয়েছে। কেউ কেউ হাসপাতালে গিয়েছে। তাদের স্যালাইন দিয়ে রাখার পর তারা সুস্থ হয়েছে।
গ্রামের আরো অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে এক ওঝা এসেছিলেন। সেই ওঝা বলে গেছেন, গ্রামে ঝাপান খেলার আয়োজন করলে জিনসাপের উত্পাত কমবে।
গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘কেউ প্রথমে জিনসাপের গল্প ছড়িয়েছে। সেখান থেকেই এ ঘটনার উৎপত্তি বলে মনে হচ্ছে। ভয়েই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’
গতকাল রবিবার গ্রামবাসীর কাছে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার সময় জানা যায়, সাত দিন আগে শুরু হওয়া অদৃশ্য সাপের আতঙ্ক এখনো বিরাজ করছে।
বিস্তারিত শুনে চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে সিনকোপাল অ্যাটাক (রক্তচাপের পতনজনিত স্বল্পকালীন সংজ্ঞা লোপ বা মূর্ছা রোগ) বলে। অসুস্থ না হওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ ভয়ে নিজেই নিজেকে অসুস্থ মনে করে। ফলে ভয়ে সে দুর্বল হয়ে পড়ে। হাসপাতালে আনলে আমরা দেখে বুঝতে পারি, তার শরীরের সব ভালো আছে, পালস ভালো আছে। তাকে স্যালাইন দিলে তার ভয় অনেক ক্ষেত্রে কেটে যায়।’
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. খাইরুল আলম বলেন, ‘বলেশ্বরপুর গ্রামে সাপের উত্পাতের খবর আমি শুনিনি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপে দংশন করা রোগীর চিকিৎসার জন্য ইনজেকশন আছে। গ্রামে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে হবে।’
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com