দুর্নীতি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে আঘাত করেছে। দুর্নীতি দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করেছে। দুর্নীতি সামাজিক অবক্ষয় ও সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দুর্নীতির কারণে অনেক পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সে পেশার আদর্শ ও নৈতিকতা। তাই যেকোনো মূল্যে দুর্নীতি দমন করতে হবে। গতকাল রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘দুর্নীতি বিরোধী অভিযান ও নেতৃত্বেও সাফল্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ দেশে আর দুর্নীতি হতে দেওয়া যাবে না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মূলত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পর থেকে দুর্নীতির ডালপালা মেলতে শুরু করে। এরপর প্রায় দুই দশকে দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে দেশে দুর্নীতের মাত্রা চরম আকার ধারণ করে। ওই সময়ে বাংলাদেশ পর পর পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। ফলে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে ২০০৯ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের বিপুল ভোটে সরকারের দায়িত্ব পেলে তিনি এই দুর্নাম ঘোচানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। দুর্নীতি বিরোধী অস্ত্র নামে খ্যাত তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেন। এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প গ্রহণ করেন। জনগণকে অল্প সময়ে, সহজে ও অল্প ব্যয়ে নাগরিক সেবা দেওয়ার জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কার্যক্রম গ্রহণ করেন।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আর্থিকভাবে সাবলম্বি করার জন্য তাদের বেতন-ভাতা প্রায় দিগুণ হারে বাড়িয়ে দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনকে সক্রিয় করান এবং দুর্নীতিবাজদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করান। তার সরকারের এরকম বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে দুর্নীতির পথগুলো ক্রমান্বয়ে সংকোচিত হচ্ছে এবং দুর্নীতির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।
আনিসুল হক বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছাও থাকতে হবে যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেখাচ্ছেন। জনগণের মন- মানসিকতা দুর্নীতি প্রতিরোধে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তাই মানুষের মনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কৌশলী হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমনে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে জনগণকে আরও সচেতন করতে হবে এবং এ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্যপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন একটি চ্যালেঞ্জিং ইস্যু। এটি একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দমন করা সম্ভব। কারণ তিনি তাঁর দেশপ্রেম, প্রজ্ঞা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার মাধ্যমে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো যেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন করতে সক্ষম হয়েছেন। বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করে তুলেছেন। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশকে অতুলনীয় দেশে পরিণত করেছেন। তিনি দুর্নীতির ক্ষেত্রে কখনো আপস করেননি।
ফোরামের আহবায়ক প্রফেসর ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন, কলামিস্ট ড. মিল্টন বিশ্বাস সুভাষ সিংহ রায় প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com
আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০
2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ
Development by: webnewsdesign.com