নোয়াখালীর

হাতিয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ, টাকায় দফারফা, অবশেষে থানায় মামলা…

সোমবার, ১৮ জুলাই ২০২২ | ১১:৫৭ অপরাহ্ণ |

হাতিয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ, টাকায় দফারফা, অবশেষে থানায় মামলা…
প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য ও ছবিতে ডেক্স রিপোর্ট

নোয়াখালীর হাতিয়াতে এক কিশোরীকে (১৬) ধর্ষণের অভিযোগে ঘটনার ৮দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। এর আগে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৭০ হাজার টাকায় দফারফা করে ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে স্থানীয় তিন সালিশদার। এ সুযোগে ধর্ষক পলাতক রয়েছে।

অভিযুক্ত জহির উদ্দিন (৩৫) উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের নলেরচর গ্রামের শাহাজান মিয়ার ছেলে। সে হাতিয়া উপজেলার চানন্দী বাজারের একজন ফার্মেসী দোকানদার এবং পল্লী চিকিসক।


সোমবার (২৮শে জুন) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের নলেরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা জানান, তারা একটি নদী ভাঙ্গা পরিবার। উপজেলার নলচিরা গ্রামে সামান্য জায়গার ওপর তার ঘর তুলে বসবাস করে আসছে। চরমুজামে তাদের একটি দাগের জমি আছে। ওই জমিতে ধান চাষ করতে ১ মেয়ে ২ ছেলেকে বাড়িতে রেখে তিনি চরে যান। সোমবার সকালে তার বড় ছেলে চট্রগ্রাম চলে যায়। এরপর ধর্ষক জহির তাকে ফোন দিয়ে জানতে চায় তিনি কোন দিন চরে যাবেন। তিনি তাকে জানালে সে কিশোরীর মাকে জানায় সে চরে যাবে তার জমিতে ধান চাষ করতে। এরপর সে আর চরে যায় নি। সোমবার দিবাগত রাতে জহির আগে থেকেই তাদের বসত ঘরের সংলগ্ন বাগানে উৎপেতে থাকে। ওই সময় প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিয়ে তার মেয়ে ঘর থেকে বের হলে সে মুখ চেপে ধরে ঘরের পাশে থাকা আরেকটি চা-বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে শরীরে ইনশেকজন মেরে হত্যার ভয় দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে চলে যায়।


কিশোরীর মা অভিযোগ করে আরো জানায়, মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে আমি স্থানীয় সালিশদার তাজু,ইসমাইলকে জানাই। এরপর তাজু আমাকে জানায়, যা হওয়ার হয়ে গেছে তিনি বিষয়টি ভেঙ্গে দেবেন। তাজু বলেন অভিযুক্ত ছেলেকে ডেকে এনে পায়ে ফেলে মাফ নিয়ে দেব। এর থেকে বেশি কিছু তিনি করতে পারবেন না। তিনি বলেন, আমরা ছেলেকে মারধর করতে গেলে বলবে আমরা নিজের হাতে ক্ষমতা নিয়েছি। জরিমানা করতে গেলে আমাদের নামে অভিযোগ আসবে। আর ছেলেকে বিয়ে পড়িয়ে কি আমরা মামলা খাব? এরপর স্থানীয় এমপির নাম ভাঙ্গিয়ে আরেক বিচারক মালেক ফরাজীকে এনে আমাদেরকে ছাড়া শুক্রবার (৮ই জুলাই) উপজেলার চানন্দী বাজারে ইসমাইল নেতার অফিসে রাত ৪টার দিকে সালিশদার তাজুসহ ৭০ হাজার টাকায় ঘটনা দফারফা করে। এরপর তারা অভিযুক্ত ছেলেকে পালিয়ে যেতে বলে। এর আগে, তারা ছেলে-মেয়ের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বললে ধর্ষক অভিযোগ স্বীকার করলে তার থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়।

পরে এ ঘটনায় গত বুধবার (১৪ই জুলাই) ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালিশদার মালেক ফরাজী ও তাজুকে আসামি করলেও পুলিশ রহস্যজনক কারণে শুধু অভিযুক্ত জহিরকে আসামি রেখে বাকী দুইজনকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।


অভিযোগের বিষয়ে জানতে একাধিকবার তিন সালিশদারের মুঠোফোনে করা হলেও ফোনে তাদের পাওয়া যায়নি।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্থানীয় কয়েকজন সালিশদার টাকার বিনিময়ে প্রথমে বিষয়টি মিটমাট করেছে বলেও তিনি শুনেছেন এবং অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগ সত্য হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ওসি আরো জানায়, ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

আপনার মুল্যবান মতামত দিন......

comments

প্রধান কার্যালয়: শিমুল লজ, ১২/চ/এ/২/৪ (২য় তলা), রোড নং ৪, শেরেবাংলা নগর,শ্যামলী,ঢাকা‌.
বার্তা বিভাগ-01763234375 অথবা 01673974507, ইমেইল- sangbadgallery7@gmail.com

আঞ্চলিক কার্যালয়: বঙ্গবন্ধু সড়ক, আধুনিক সদর হাসপাতাল সংলগ্ন, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও-৫১০০

2012-2016 কপি রাইট আইন অনুযায়ী সংবাদ-গ্যালারি.কম এর কোন সংবাদ ছবি ভিডিও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথায় প্রকাশ করা আইনত অপরাধ

Development by: webnewsdesign.com